আগামীর বাজেট হোক জনগণ বান্ধব
রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য প্রতি বছর বাজেট প্রণয়ন করা হয়। রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে কোথায় কত ব্যয় হবে এবং এই ব্যয়ের অর্থ কোথা থেকে আসবে তার একটা হিসাব-ফিরিস্তিতো থাকতে হয় ।এ হিসাব-ফিরিস্তি রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।
তবে এ গুরুত্বের হিসাব সবাই একইভাবে করে না ।যাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন বাজেট নেই তাঁদের কাছে রাষ্ট্রের বাজেটের গুরুত্ব এক রকমের এবং যাদের আছে তাঁদের কাছে এর গুরুত্ব আরেক রকমের ।আবার এই যে দৈনন্দিন জীবনে যাদের বাজেট নেই তারাও একই কাতারের মানুষ নয় ।এদের মধ্যেও আছে বিস্তর ফারাক ।এদের মধ্যে সংখ্যায় বিপুল কিন্তু রাষ্ট্রের প্রকাশ্য গুরুত্ব যাদের ওপর কম বা নেই বললেই চলে তাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন বাজেট নেই ।তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে বাজেট না থাকার কারণ হলো বাজেট যা দিয়ে করতে হয় সেই অর্থ তাঁদের জীবনে নেই ।আর দৈনন্দিন বাজেট নেই তাঁদের যারা তুলনায় খুবই কম হলেও সংখ্যায় বেশ বড় হয়েছে বাংলাদেশে এবং রাষ্ট্রের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল গুরুত্ব তাঁদেরই ওপর;
রাষ্ট্র তাঁদেরই ।এদের দৈনন্দিন জীবনে বাজেটের কোন প্রয়োজন পড়ে না ।কারণ বাজেট হলো অভাব-চাহিদা-যোগান-উপায়ের মধ্যে সামঞ্জস্যতা সৃষ্টির জন্য একটি নিয়ম বা হিসাবের জন্য প্রয়োজন পড়ে । যাদের জীবনে এগুলোর কোন প্রয়োজন পড়ে না তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে বাজেটেরও কোন প্রয়োজন পড়ে না ।আর একটি অংশ থাকে যাদের বেশিরভাগেরই পা পিছলে সংখ্যাগরিষ্ট বিপুলের মধ্যে পড়ার আশংকা থাকে আর কিছু সংখ্যকের রাষ্ট্রের সকল গুরুত্বের কেন্দ্রে থাকা সংখ্যালঘুর সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য আশির্বাদের ইশারা থাকে ।তাই বা্জেট নিয়ে ভাবনা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের একরকম হয় না । বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রতি রাষ্ট্রের প্রকাশ্য গুরুত্ব না থাকলেও অপ্রকাশ্য গুরুত্ব এবং আয়োজন সব সময়ই থাকে ।কারণ এরাই বাজেটের অর্থের প্রকৃত যোগানদার । রাষ্ট্রের এদের প্রতি অপ্রকাশ্য গুরুত্ব বুঝা যায় বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দের খাতের দিকে তাকালে।
শুরু হয় এক খেলা ।এই
খেলায় তাঁদের কতকগুলো সাধারণ শব্দ উচ্চারণ করতে দেখা যায় ।‘উচ্চাভিলাষী’
, ‘অবাস্তব’
, ‘কার্যকর করা কঠিন’,
‘চ্যালেঞ্জিং’
, ‘রাজনৈতিক’
এমনই আরো অনেক শব্দ বাজেট আলোচনায় ভেসে বেড়ায় এসব শব্দের মধ্যদিয়ে বাজেটের পূর্বাপর সকল দায় থেকে বাজেট প্রণেতাদের মুক্তি দেয়া হয় ।ব্যর্থতা বলে আর কখনোই কিছু ঘটবে না ।এসব শব্দের বিপরীতে
‘দায়’ , ‘ব্যর্থতা’ নামক শব্দের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না ।
বাজেট কিছুটা হলেও একটা মুখোশ হয়ে যায় ।এ মুখোশের বাইরে থাকে বিভিন্ন খাতে মোটা দাগে বরাদ্দের কিছু তালিকা । ভিতরে থাকে সেই বরাদ্দ নিয়ে অন্য খেলা অন্য রূপ ।
আগামীর বাজেট হোক অর্থনীতি বান্ধব, জনগণ বান্ধব।
Comments
Post a Comment