ফ্যাশন হাউস ‘রঙ’

মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলির মধ্যে অন্যতম পোশাক। এক সময় মানুষ পোশাক তৈরি করতে জানত না। তখন গাছের লতা-পাতা ও বাকল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করত। কালক্রমে মানুষ প্রথমে সুতা ও পরে পোশাক তৈরি করতে শিখে। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক যুগে এই পোশাকে আসে নানারকম বৈচিত্র। মানুষ হয়ে ওঠে ফ্যাশন সচেতন। এ যাত্রায় পিছিয়ে নেই তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাংলাদেশও। এদেশের ফ্যাশন সচেতন মানুষের রুচির দিকে লক্ষ্য রেখে অনেকগুলো ফ্যাশন হাউস পোশাক তৈরি করছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ‘রঙ’। বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবকে সামনে রেখে দেশীয় রঙ ও দেশীয় আত্মপরিচয়কে সামনে রেখে পোশাক তৈরি করে ‘রঙ’ ফ্যাশন হাউস। তারা কাজ করে যাচ্ছে দেশের তাঁতশিল্প ও কারুশিল্পের প্রসার ও উন্নয়নে। গেল ২১ বছর ধরে তারা আস্থা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাংলাদেশের ফ্যাশন সচেতন মানুষের চাহিদা পূরণ করে চলছে।

রঙ-এর পথচলা:
১৯৯৪ সাল থেকে ‘রঙ’ বাংলাদেশে বিপনন ভিত্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাঁতশিল্প ও কারুশিল্পের প্রসারে উন্নয়মূলক কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে। সময় রাঙানোর ব্রত নিয়ে ‘রঙ’ বাংলাদেশের পোশাক সংস্কৃতিতে নিয়ে এসেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। রঙ-এর মূল ফ্যাশন ভাবনা গড়ে উঠেছে দেশীয় আত্মপরিচয়কে ঘিরে। দেশীয় রঙ, দেশীয় কাপ, রঙ-এর সামগ্রীর মূল উপাদান। আর পণ্যের মাধ্যমে শিল্পবোধ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া রঙ-এর মূল আদর্শ। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গী নয়, অনেকক্ষেত্রে সামাজিক দায়িত্ব ও মূল্যবোধ থেকে সকল উৎসবে-পার্বণে বিশেষ আয়োজন কওে থাখে এই প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি উৎসবে-পার্বণে ক্রেতারা এখন আগ্রহভরে অপেক্ষা করে রঙ-এর নতুন কিছুর আশায়। রঙ-এর ফ্যাশন ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রঙের বৈচিত্রপূর্ণ প্রয়োগ। এই প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ সামগ্রীতে এই ভাবনার নির্যাসই প্রতিফলিত হয়েছে বারবার। দেশীয় তাঁত ও কারুশিল্পের উন্নয়ন এবং নিত্যনতুন পোশাক ও কারুপণ্যের প্রবণতা সংযোজনের মাধ্যমে ‘রঙ’ এখন এদেশের অন্যতম ফ্যাশন উদ্যোগ হিসেবে পরিগনিত হয়।

রঙ-এর পণ্য:
শাড়ী, সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট, পলো শার্ট, ওড়না, লুঙ্গি, বিছনা চাদর, ব্লাউসের পিচ এবং গিফট আইটেম। যেমন- মগ, সিডি, লেডিস ব্যাগ, মোবাইল ব্যাগ, বাংলিস, গহনা ইত্যাদি। রঙ ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবকে কেন্দ্র করে ইউনিক ও ব্যতিক্রম আইটেমের পণ্য বাজারে আনার চেষ্টা করে। তার মধ্যে যেমন রঙের ঈদ আয়োজন, বৈশাখী আয়োজন, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২৬ শে মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর ও পূজা ইত্যাদি।  ক্রেতাসাধারণের রুচি ও মূল্যবোধ অনুসারে দৃষ্টিনন্দন এক্সক্লুসিভ এন্ডি, এন্ডি সিল্ক, সিল্ক, জামদানী, মসলিন, রেশমী কটন, ডুপিয়ান সালোয়ার-কামিজ নিয়ে কাজ করেছে রঙ। সাম্প্রতিক সময়ে রঙ-এর কাপড়ের বুননে ও রং-এ অনেক পরির্বতন আনা হয়েছে।

রঙ-এর কর্মীবাহিনী:
ফ্যাশন হাউস রঙ-এর রয়েছে প্রায় ৪’শ নিজস্ব কর্মীবাহিনী। যারা সরাসরি রঙ এর বেতন কাঠামোভুক্ত। এ ছাড়া আরো হাজার হাজার কর্মী সুতোয় রং করা, বোনা, বিভিন্ন পোশাকে বিভিন্নরকম কারুকাজ করা ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

রঙ-এর শো-রুম:
নারায়ণগঞ্জে রঙ-এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। এ ছাড়া রঙ-এর ১৫টি নিজস্ব শো-রুম রয়েছে। যার মধ্যে ১০টি ঢাকায় (শান্তিনগর, বেইলি রোড, ধানমন্ডি-২, ধানমন্ডি-৭, লালমাটিয়া, পান্থপথ, বনানী, তেজগাঁও-গুলশান লিঙ্করোড, কুড়িল বিশ্বরোড ও উত্তরা)। একটি সিলেটে, একটি চট্টগ্রামে, একটি সুনামগঞ্জে, একটি বি.বাড়িয়ায় ও একটি নারায়ণগঞ্জে।

Comments

Popular Posts