সফল ও নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান

একাত্তর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে  শিল্পায়নের পথে সমৃদ্ধ অগ্রযাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করতে যেসব উদ্যোক্তা অগ্রণী ভুমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নাম সালমান এফ রহমান। গণমাধ্যমে ঋণ খেলাপি হিসেবে এবং শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির হোতা হিসেবে তার নাম এসেছে অনেকবার। কিন্তু তা মুখরোচক গসিপ হয়ে রয়ে গেছে। সালমান এফ রহমান নিজেকে গড়ে তুলেছেন সফল ও নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী হিসাবে। সমালোচনা উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন বিশ্ব পরিমণ্ডলে।

গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বড় ভাই আহমেদ সোহেল রহমানের সাথে একত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠা করেন সালমান এফ রহমান। নাম দেন বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট কোম্পানী যা এখন বেক্সিমকো গ্রুপ নামে পরিচিত। তারা ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল, সিরামিকস, সিনথেটিকস, জুট, রিয়েল এস্টেট, প্রকৌশল, মেরিন ফুড, আইটি, এভিয়েশন, অ্যানার্জি, জ্বালানী, মিডিয়া, টিভি চ্যানেল, টেলিকমিউনিকেশন্সসহ বিভিন্ন খাতে ৩৯টি পাবলিক এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ৭০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব কোম্পানির উৎপাদিত বিশ্বমানের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। বেক্সিমকো গ্রুপ বাংলাদেশের শীর্ষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান। শিল্পের পাশাপাশি তিনি বড় ভাইকে নিয়ে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক আইএফআইসি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮১ সালে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক এবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন।

সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি ও দৃঢ়ব্যক্তিত্বের অধিকারী সালমান এফ রহমান শুধুমাত্র বেক্সিমকো গ্রুপের বৃদ্ধি ও প্রসারই নিশ্চিত করেননি, একই সাথে তিনি সফল ভাবে বাংলাদেশের ব্যবসা খাতে উন্নয়ন এবং গতিশীলতা এনেছেন।


তিনি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এফবিসিসিআই এর প্রথম সভাপতি। তিনি ১৯৯৫-১৯৯৭ মেয়াদে সার্ক চেম্বারের সভাপতি হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে অসামন্য ভুমিকা রাখেন।সার্ক চেম্বারের সভাপতি হিসেবে তার দক্ষতা ও গতিশীল নেতৃত্ব দেশগুলোর ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ কর্তৃক ভুয়সী প্রশংসা লাভ করে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের এর দীর্ঘকালীন সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স এবং এলপিজি অপারেটরস এসোসিয়েশনসহ বহু ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্বরত।

সালমান এফ রহমান ১৯৫১ সালের ২৩ মে করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার শাইনপুকুর গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ফজলুর রহমান ছিলেন খ্যাতিমান আইনজীবী। তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্টের চীফ হুইপ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি হোসেন সোহরাওয়ার্দী সরকারের রাজস্বমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৪৭-১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তদানিন্তন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে শিক্ষা ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার মাতা সৈয়দা ফাতিনা রহমান কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জঙ্গলবাড়ীর সৈয়দ বংশের জমিদার সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুল্লার কন্যা। সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ হযরত শাহজালাল (রা:) এর সিলেট বিজয়ের প্রধান সিপাহশালার সৈয়দ নাসিরুদ্দিনের বংশধর ছিলেন। সৈয়দা ফাতিনা রহমান মাতৃসূত্রে নবাব আবদুল লতিফ, নবান সৈয়দ মুহাম্মদ, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এর বংশধর ছিলেন। তিনি উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম ছাত্রী হিসেবে স্বর্ণপদকসহ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং লেডি বেব্রুন কলেজে লেকচারার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। সালমান এফ রহমান ব্যক্তি জীবনে বিবাহিত। স্ত্রী, এক পুত্র এবং চার নাতি নাতনী নিয়ে তার সংসার।

বিনামূল্যে ঔষধ ও পোশাক বিতরণ তাঁর নিয়মিত দাতব্য কাজগুলির মধ্যে অন্যতম। দোহারের মানুষের সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য তিনি ২৪০টিরও বেশি আর্সেনিক মুক্ত টিউব ওয়েল স্থাপন করেন এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেন যার মাধ্যমে ১৬ জন ডাক্তার নিয়মিতভাবে চিকিৎসা এবং ঔষধ প্রদান করছেন।

Comments

Popular Posts